মহান ও মর্যাদাবান আল্লাহ্ তা‘আলা আদমকে সৃষ্টি করে জান্নাতে বসবাস করতে দেন। অতঃপর আল্লাহ্ আদমকে শ্রেষ্ঠত্ব বুঝানোর জন্য তাঁর সামনে সিজদা করতে ফেরেশতাগণকে আদেশ করেন। আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী সকল ফেরেশতাই আদমকে সিজদা করেছেন। কিন্তু অহংকারের বশে ইবলিস আল্লার্হ আদেশ অমান্য করল। ফলে সে বিশ্ব প্রতিপালকের দ্বারা অভিশপ্ত হলো। তখন থেকে ইবলিস আদমের শত্রæ। সে আদম ও (তার স্ত্রী) বিবি হাওয়াকে প্ররোচনা দিল, নিষিদ্ধ গাছের নিকটবর্তী করল ও তাদেরকে এর ফল খাওয়াতে সক্ষম হল। এ অপরাধের পরিণামে আদমÑহাওয়া বেহেশত থেকে বহিষ্কৃত হলেন। মানুষের চিরশত্রæ ইবলিস তখন থেকেই পেছনে লেগে রইল। দুনিয়াতে আদমের আগমের পর থেকে মানব জাতির অগ্নিপরীক্ষা আরম্ভ হল। মানুষের জন্য এ পৃথিবী একটি কঠিন সমর কেন্দ্র। এখানে ইবলিশ ও তার শিষ্যদের বিরুদ্ধেই মানুষের মূল সংগ্রাম।
১. ইবলিস তার রবকে বলল, “হে প্রতিপালক! আদমকে দুনিয়ায় নামানো হয়েছে। আর তুমি জান যে, তার জন্য কিতাব ও রাসূল প্রেরণ করা হবে। তবে তাদের কিতাব কি হবে? আর তাদের রাসূল কিরূপ হবে?” তিনি বললেন, “তাদের রাসূল হবে ফেরেশতাগণ এবং তাদের মধ্যে থেকে প্রচারিত হবে নবীগণ, আর তাদের কিতাব হবে তাওরাত, যাবূর, ইঞ্জিল ও কোরআন।” সে বলল, “তবে আমার কিতাব কি?” তিনি বললেন, “তোমার কিতাব হল উল্কি চিহ্ন, তোমার পাঠ হল কবিতা, তোমার রাসূল হল জ্যোতিষিগণ। তোমার খাবার হল যার ওপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারিত হয়নি। তোমার পানীয় যাবতীয় নেশার বস্তু। তোমার সত্যবাদীতা হল মিথ্যা। গোসলখানা তোমার ঘর, তোমার ফাদ হল স্ত্রীলোকগণ। তোমার মুয়াযযি¦ন বাদ্যযন্ত্রাদি এবং তোমার মসজিদ হল বাজারসমূহ।” তিবরাণী আলোচ্য হাদীসখানা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
২. ইবলিস তার রবকে বলল, “আপনার ইজ্জত ও জালালের কসম! আমি আদম সন্তানকে পথভ্রষ্ট করতে থাকব, যে পর্যন্ত তাদের ভেতর প্রাণ থাকে। আল্লাহ্ বললেন, আমার ইজ্জত ও জালালের কসম! আমি তাদেরকে ক্ষমা করতে থাকব, যে পর্যন্ত তারা আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে।” হযরত আবূ নুয়াইম আলোচ্য হাদীসখানা আবূ সাঈদ (রাঃ) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
Leave a Reply